অবিচুয়ারি: খালিদ (চাইম)

Share

একজন গ্রেট আরটিসট সময়রে পার হয়া যান – এইরকম কথা তো আছে; মানে উনি বা উনার আর্ট ট্রানসেনড কইরা যায়; তার মানে, আর্টে একটা ‘সময়’ তৈরি হয়, একটা সুর থাকে, স্বর থাকে, ইসটাইল থাকে একেকটা সময়ের; একজন গ্রেট আরটিসট অই সময়টার ভিতরেও থাকেন, আর অই সময়টারে তৈরি করেন অনেক গুড-এভারেজ আর্টিস্টরা, এক সাথে মিইলা; আমাদের নাইনটিজের সময়টারে যারা তৈরি করছিলেন, চাইমের খালিদ তাদের একজন…

অই সময়ে চাইম, অন্য অনেকগুলা ব্যান্ডের মতোই একটা ব্যান্ড ছিল; মানে, ভালো-ব্যান্ড – সোলস, মাইলস, রেনেসা’র মতো পুরান ব্যান্ডগুলার পরে ছিল চাইম, অবসকিওর, ডিফরেন্ট টাচ…চাইমের ভোকাল হিসাবে উনার ‘গলা’ ছিল সুন্দর…

কিনতু খালিদ আসলে খালিদ হয়া উঠছেন চাইমের আরো অনেক বছর পরে, ব্যান্ড-ট্যান্ড যখন আর তেমন একটা নাই, বা অন্য নতুন ব্যান্ডগুলা আইসা নাইনটিজের ‘প্যানপ্যানানি রোমানটিক’ গানগুলারে ‘পুরান’ বানায়া ফেলছে; তখন খালিদ আবার নতুন কইরা ‘রোমানটিক’ গান নিয়া আসছেন – যদি হিমালয় হয়ে, সরলতার প্রতিমা, হয়নি যাবার বেলা… অইগুলা নাইনটিজের টোনগুলারেই ক্যারি করে, কিনতু আরেকটু সিরিয়াসলি, অকওয়ার্ডভাবেও…

তো, এইভাবে খালিদ খালি কাম-ব্যাক করেন নাই, খালিদ হয়া উঠছিলেন; যিনি চাইমের খালিদের চাইতেও একটু বেশি কিছু হয়া উঠছিলেন…

একটা সময়ের আর্ট, মিউজিক আসলে কালেকটিভ মেমোরি তৈরি করে, একেকটা গানের ভিতর দিয়া একেকটা ঘটনারে, ফিলিংসরে আমরা মনে রাখি; আর এইভাবে পারসোনাল মেমোরিগুলা জমা হইতে হইতে একটা কালেকটিভ মেমোরি তৈরি হয়, একটা সময়ের… খালিদের গানে এইরকম একটা ‘সময়’ তৈরি হইছিল আমাদের

যেই কারনে একটা স্যাডনেস তৈরি হইছে আমার মনে, আমার ধারনা, আমাদের সময়ের অনেকের মনে; আমাদের জেনারেশনের পরে যারা উনার গান শুনবেন, তাদের এইটা ভাল্লাগবে না – তা না, কিনতু খালিদের গানের ভিতর দিয়া নাইনটিজের একটা ট্রিবিউট-ই আমরা পাইতে পারবো মেবি…

তবে ট্রাজেডি’টা হইলো, যতদিন উনি বাঁইচা ছিলেন, গান গাইতেছিলেন, তখন উনার গান ভালো-লাগলেও উনার কনট্রিবিউশনের জায়গাটারে মেবি আমরা তেমন কেউ এপ্রিশিয়েট করতে পারি নাই পাবলিকলি, এখন যখন উনি মারা গেছেন, তখন বলতে পারতেছি, ইউ উইল বি মিসড, খালিদ!

ইমরুল হাসান

কবি, ক্রিটিক, ফিকশন-রাইটার, ট্রান্সলেটর। জন্ম ১৯৭৫ সালে। থাকেন ঢাকায়, বাংলাদেশে।

  • March 19, 2024