সোশাল-মিডিয়ার ‘গুজব ও ফেইক-নিউজ’-এর ভাওতাবাজি নিয়া

এই নিয়া তিনটা কথা আছে আমার।
আগে গুজবের ব্যাকগ্রাউন্ডটা নিয়া বলি। গুজব মানে মিছা-কথা না, গুজব মানে হইতেছে ভিজিবল কোন ট্রুথ না-থাকা; ফেক্ট বা ইনফরমেশনরে যখন গোপন করা হয়, লুকায়া রাখা হয় তখনই গুজবের শুরু হয়। একটা কিছু নিয়া গুজব রটতেছে তার মানে হইতেছে অই বিষয়ে সত্যি-কথাটা জানা যাইতেছে না। যদি ঘটনাটা নিয়া আলাপ-আলোচনা থাকে, সেইটা নিয়া গুজব খুব একটা ছড়াইতে পারে না।
তো, এই ব্যাকগ্রাউন্ড থিকা যদি দেখেন, গুজব ছড়াবে আসলে তখনই, যখন কোন ফেক্ট জানার এবং বলাবলি করার জায়গাটারে জোর কইরা চুপ করায়া দেয়া হয়। কোন একটা কিছু গুজব ছড়াইতেছে তার মানে একটা মানে হইলো এইখানে কোন কন্ট্রোলের ঘটনা ঘটতেছে, বা মিডিয়ামটারে মেনিপুলেট করা হইতেছে। তো, মেনিপুলেট করার ক্ষমতা কার আছে? যার মিডিয়ামের উপরে কন্ট্রোল আছে তার বাইরে কারো পক্ষে কি এইটা করা পসিবল?
মানে, আমি বলতে চাইতেছি, গুজব বেশিরভাগ সময়েই পাওয়ারফুল লোকজনের কাজ; অপ্রেশনে থাকা মার্জিনালাইজড লোকজনের রেজিসটেন্সের ঘটনা না; সাব-অল্টার্ন স্টাডিজে যেইটারে পপুলার কইরা তোলা হইছে অনেকটা। এইটা হইতে পারে, বা হয়, কিন্তু অই নাম্বারটা কমই হওয়ার কথা। আমি বলতে চাইতেছি, গুজব যতটা না রেজিসটেন্সের টুল তার চাইতে অনেক বেশি কন্ট্রোল-উইপেন।
বাংলাদেশের এখনকার কনটেক্সটে নিউজ-মিডিয়াতে একটা গুজবের এনভায়রনমেন্ট তৈরি কইরা রাখা হইছে। পলিটিকাল পাওয়ারের কব্জা থিকা বাইর হওয়ার কোন উপায়ই এইখানে নাই। যার ফলে মানুশের সোশাল-মিডিয়া ডিপেন্ডেসি বাড়তেছে, কারণ সোশাল-মিডিয়ার বাইরে কর্পোরেট-মিডিয়াতে ফেক্ট জানার কোন স্কোপ নাই। যেইটারে সবচে আগে রিকগনাইজ করতে পারা দরকার আমাদের।
সেকেন্ড কথা হইতেছে, সোশাল-মিডিয়া নিয়া। সোশাল-মিডিয়াতে গুজব পয়দা হইতেছে – এইটা মিছা-কথা না, কিন্তু যেই অথেনিটিসিটি আমরা এক্সপেক্ট করি, সেইটা তো কখনোই পসিবল না! সোশাল-মিডিয়া টিইকাই আছে এক ধরণের রিয়ালিটি-প্রজেকশনের ভিতর দিয়া, যেইটা রিয়েল না; মানে, এইটা যদি রিয়েলই হয়, তাইলে তো নিউজই হইতো! সোশাল-মিডিয়াতে রিয়েল-পিকচার পাওয়া যায় না – এইটা কোন অভিযোগ হইতে পারে না, কারণ ফেসবুকের বা টুইটারের প্রমিজ এইটা না, আরেকটা অথেনটিক নিউজের সোর্স হয়া উঠা।
কিন্তু এইটা বলার পরে, এই আন্ডারস্ট্যান্ডিংটা জরুরি যে, রিয়ালিটির ডিসটরশনই এর উদ্দেশ্য না, বরং এক ধরণের শিফটিং যে এইখানে ঘটে, বা ঘটতে বাধ্য, যেই পয়েন্টটারে রিকগনাইজ করতে পারাটা দরকার। এই যে শিফটিং’টা এইখানে ঘটতেছে, সেইটার কন্ট্রোল করার ভিতর দিয়া, রেগুলেট করতে পারার ভিতর দিয়া ডিজায়ারড অবস্থায় পৌঁছানো যাবে না কোনমতেই, কারণ এইখানে বেইজটাই আলাদা! এইটা হইতেছে আমার সেকেন্ড পয়েন্ট’টা।
ব্যাপারটা কখনোই এইরকম না যে, সবকিছু ছাইড়া দিতে হবে বা একটা লেভেল পর্যন্ত কন্ট্রোল করতে পারতে হবে, বরং সার্টেন বাউন্ডারির ভিতরে মানুশ-জনরে আসলে এক্ট করতে দিতে পারতে হবে, এবং যখনই উইথ-ইন দ্য বাউন্ডারি কন্ট্রোল-মেকানিজমরে এস্টাবলিশ করা হবে, সেইটা এক্ট করার জায়গাটারে লিমিট কইরা তুলবে। আর এইটা ইনহেরিয়েন্টলি অনলাইন স্পেইসগুলারই একটা সমস্যা। মানে, এইটা নিজে নিজেরে এক্সপান্ড করতে পারে না, এবং কিন্তু একইসাথে যখনই কেউ বাউন্ডারিগুলারে এক্সপান্ড করতে থাকে তখন সেইটা আর এজ ইট ইজ থাকতে পারে না, যার ফলে অই জায়গাগুলারে সামাল দিতে হয় বা রেগুলেট করা শুরু করা লাগে। আর যখনই কোন প্লাটফর্ম অই জায়গাটাতে আইসা পৌঁছায়, তার শেষটা শুরু হইতে থাকে।
তো, গুজবের কারণে ফেসবুক বা অন্য প্লাটফর্মগুলা রিস্কে পড়তেছে না, বরং এক্ট করার জায়গাগুলা যেইভাবে এক্সপান্ড করতেছে, সেইটারে কন্ট্রোল এবং মেনিপুলেট করতে না পারলে ব্যাপারটারে প্রফিটেবল কইরা তোলাটা পসিবল হবে না – এইটা একটা মেজর কনসার্ন হিসাবে কাজ করে এইখানে!
গুজব ও ফেইক-নিউজ আটকাইতে চাইতেছে সোশাল-মিডিয়া প্লাটফর্মগুলা – এইটা উদ্দেশ্য-না না, এইটা একটা সাইডলাইনের ঘটনা বইলা আমি মনে করি। এইটা হইতেছে আমার থার্ড পয়েন্ট’টা। মেইন উদ্দেশ্য হইতেছে মোর কন্ট্রোলড একটা এনভায়রনমেন্ট তৈরি করা। যেইভাবে নিউজ-মিডিয়ারে কন্ট্রোল করা যাইতেছে একইরকমভাবে যদি সোশাল-মিডিয়ার স্পেইসগুলারে কন্ট্রোল করা না যায় তাইলে ‘গুজব ও ফেইক নিউজ’ বাড়তে থাকবে না, বরং ক্রাউডের ওয়েব’টা কোনদিকে যাবে সেইটারে এতোটা ডিটারমাইন্ড কইরা দেয়া যাবে না। মানে, উদ্দেশ্যটা ইন্টার-একশনরে একটা স্পেইসের মধ্যে ওপেন-আপ করা না, বরং সেইটারে লিমিট করা এবং স্পেসিফিক ডিরেকশনে ডাইবার্ট করতে পারার ক্ষমতার লগে রিলেটেড ঘটনা।
২.
তো, এইটারে এড়ানোর বা এর থিকা বাইর হওয়ার কি উপায়? এক নাম্বার উপায় অবশ্যই ইউজারের হাতে যত বেশি অথরিটি দেয়া যাবে তত বেটার; এবং একটা প্লাটফর্ম যত বেশি গোপন এলগারিদম নিয়া কাজ করতে থাকবে, ততই ধীরে ধীরে জিনিসটা বাতিল হইতে থাকবে, ইন্টার-একশনের জন্য প্রাণহীন হইতে থাকবে। সেকেন্ড আরেকটা আসপেক্ট হইতেছে, ফ্রিডম ভার্সেস কন্ট্রোলের পয়েন্ট’টা থিকা সরতে পারলে বেটার; বরং ফিচারগুলা পাস্ট-এক্সপেরিয়েন্সড বেইজড না হয়া ফিউচার-অরিয়েন্টেড হইতে পারলে ভালো; কিন্তু তাইলে টেকনোলজির এখনকার যে এরা (era) তারেই আসলে নতুন কইরা রি-থিংক করা লাগবে তখন। কারণ এইটা প্রজেক্টেড একটা রিয়ালিটিরে যতটা না রিয়েল কইরা তোলার ঘটনা তার চাইতে অনেক বেশি রিয়ালিটিরে ওপেন-এন্ডেড ঘটনা হিসাবে ধইরা নিয়া ক্রিয়েট করতে পারার কাজ। যা-ই হোক, সেইটা মেবি অন্য আরেকটা আলাপ…
Leave a Reply