নিউজ কি দেয় আমাদের? – কবির আহমেদ

আলাপটা পুরাতন কিন্তু কন্টেক্সট টাটকা।
নিউজ ছিল কনসেনসাস রিয়েলিটির ফ্যাক্ট তুলে ধরা। একটা একসিডেন্ট হল, তার খবর মানুষের কাছে পৌঁছানো। কিন্তু এখন কি তাই? নিউজ রিয়েলিটির কোন খবর আর দেয় না, বরং একটা হাইপাররিয়েলিটি তৈরি করে।
কোন রিয়েলিটি তৈরি করে? যেই রিয়েলিটি কালচারালি কনস্ট্রাক্ট করা এবং পপুলার, তার ফেভারে।
টিকটক কিংবা ইনস্টাগ্রামে যে রিয়েলিটি আছে, কি করে সেলিব্রেটিরা, তার ধারাবাহিকতা বা প্রাসঙ্গিকতায় নিউজ প্রোডিউস করে। যেমন, আমাদের নায়িকা ‘পরিমণি’, বা ‘অনন্ত জলিল’ তার সম্পর্কে কালচারালি যা পপুলার, যেমন পরিমণি কোন ধরনের নারী কিংবা অনন্ত জলিল ইংরেজি পারে না-এই রকম নিউজ। সেলিব্রেটিদের উদাহরণ দিলাম। কিন্তু একই কথা অন্যান্য ব্যাপারেও সত্য। কিউ জং উনকে যেইভাবে পপুলারলি পোট্রে করা বা জো বাইডেনকে যেইভাবে পোট্রে করা-সেইভাবেই নিউজ প্রেজেন্ট করা হবে। নিউজ কালেক্ট করা হবে। পজেটিভ বা নেগেটিভ-ব্যাপার না। কোন ট্রেন্ডে পপুলার-সেই প্যারামিটারে। ‘পপুলারিটি’ একটা জনরা।
নিউজ আর পর্ণোগ্রাফির মধ্যে মিল আছে এখন। পর্ণগ্রাফি তার অডিয়েন্সের জন্য এক পারভার্ট রিয়েলিটি তৈরি করে। পর্ণোগ্রাফিক একশন কখনোই ইন্টারেস্টিং না। তার যে কনটেক্সট এইটা ইম্পর্ট্যান্ট।
দুইটা সিনেমার কথা মনে আসলো। সিডনি লুমেটের ‘নেটওয়ার্ক’ এবং ড্যান গিলরয়ের ‘নাইটক্রলার’।
নাইটক্রলারে প্রোটাগনিস্ট অনৈতিক উপায় এবং এক্সপ্লয়টেশনের মাধ্যমে নিউজ তৈরি করার ট্রাই করে। মানে এমন যে, প্রয়োজনে একটা গাড়ি দূর্ঘটনায় ফেলে সেই দূর্ঘটনা নিয়ে নিউজ করার পসিবলিটি।
আর নেটওয়ার্কে একজন এঙ্কর লাইভে স্যুইসাইড করার ঘোষণা দিলেও চ্যানেল বরং রেটিং বাড়াতে তাকে দিয়ে শো চালিয়ে যায়।
নিউজ প্রোডাকশনের ক্ষেত্রে আসলে পারপাস অডিয়েন্স এবং পপুলারিটি। পপুলারিটির বেসিসে একটা মিডিয়া সারভাইভ করে। ফলে তাকে সত্য বা মিথ্যা নয়-পপুলার নিউজ প্রোভাইড করতে হয়।
পাওয়ার সার্ভ করতে হয়। ক্যাপিটালিজমের সবচেয়ে কাছাকাছি রেপ্লিকেশন। সেল্ফ সাসটেইনিং প্যারসাইট। এস্টাবলিস্টমেন্টের মন্দির।
ফলে নিউজ আপনার জানা বা না জানা অথবা সত্য বা মিথ্যার ঘটনা না। বরং আপনার সামনে যে প্রজেক্টেড রিয়েলিটি তৈরি করা হবে, তার জন্য প্রয়োজনীয় নিউজ প্রোডিউস করা হবে।
ফলে পলিটিক্স থেকে মিডিয়া -কোন সময় দূরের ঘটনা না। মিডিয়া যেকোন ক্ষমতার সবচেয়ে বড় অংশীদার।
Leave a Reply