ফাষ্ট লাইটের বিপদে দুঃখ আমরা অবশ্যই পাই; কিন্তু… – ইব্রাকর ঝিল্লী

Share

১.
এই রকম একটা আলাপ দেখা যাইতেছে যে, ফাশট লাইটের বিপদে আজকে পাশে না থাকলে কালকে বিপদ আমার উপর আসবে। এই আলাপটা মনে হয়, “পরথমে ওরা আমার পরতিবেশিরে মারছে, আমি কিছু বলি নাই, তারপর ওরা…” এই জায়গা থেকে আসছে। তো এইটারে আমি পুরাপুরি ভুল বলি না। তবে এর একটা ক্রিটিকাল পয়েন্ট আছে। ওই পয়েন্টের পরে এটা আর ম্যাটার করে না। তো বাকশাল সেই ক্রিটিকাল পয়েন্ট পার কইরা ফেলছে। ফাষ্ট লাইটের এই বিপদ আসার আগেই বাকশালের সন্ত্রাস উবিকুইটাস হয়ে গেছে। এর পরে যদি আমারে বাকশালের শিকার হইতে হয়, সেইটার সাথে ফাষ্ট লাইটের বিপদে পড়ার রিশতা নাই আসলে। বাকশালের জুলুমের এপারেটাস এখনো সকলরে একবারে খাইয়া দেয়ার মত এফিসিয়েন্ট হয় নাই বইলাই আমরা বাইরে। ওই লেভেলে থাকলে একবারেই খায়া দিত। মানে বাকশালের খায়েশ ওইটাই। পারেনা হয়ত। মানে এরপরে আমি যদি জুলুমের শিকার হই, সেইটা বাকশালের ধারাবাহিক কার্যক্রমের অংশ হিসাবেই হবো। এর সাথে ফাষ্ট লাইটের বিপদের রিশতা নাই।

একটা জুলুম কইরা পার পাইয়া, তারপর এই রকম দানব হইয়া ওঠার রাস্তায় যে আসছে, তাতে ফাষ্ট লাইটদের মদদ ছিলো আলবত। এখন আর ওইটা ম্যাটার করে না।

২.

ক.
বাংলাদেশের পলিটিকাল সিনে যে দুইটা পক্ষ দেখানোর এন্তেজাম চলতেছে এখন, সেই দুইটা পক্ষের একটা পক্ষরে পাবলিক আউটরাইট হেইট করে, আরেকটা পক্ষ যেইটা, পাবলিক ওইটার ব্যাপারে সিম্পলি ডোন্ট গিভ এ সিঙ্গেল *ক। তো এই রকম একটা সিচুয়েশনে যে পলিটিক্স পয়দা হয়, সেই পলিটিক্সে পাবলিকের কোন স্টেইক থাকে না।

খ.
এই রকম একটা জিনিশ আমাদেরকে খাওয়ানোর চেষ্টা চলতেছে যেন ফাষ্ট লাইট গেলে আমাদের সব যাবে। এই খানার সমস্যা দুইটা- ১. এইটা বলে যে এখনো আমাদের সব যায় নাই। মানে যা যা গেছে সেইসব যাওয়া মামুলি উধাও মাত্র। আসল উধাও হবে এইটা। ২. এইটা আরও বলে ফাষ্ট লাইট থাকাটা যেনবা এই রেজিমের জন্য একটা ট্রু মুসিবতেরই মামলা। অথচ এই রেজিমে যারা উধাও হইছে, তাদের কার্যকর অপরায়নে ফালার প্রভুত অবদান রয়েছে।

গ.
ফালার ঘটনা হইতেছে উনারা ‘জার্নালিজম’ করতে চায়। অন্তত। মানে অন্য আর সকল মিডিয়ার মত ওপেনলি লিগের উইং হওয়ার খ্যাতামো করতে চায় না। এইটা না করতে চাওয়ার ফল স্বরূপ কিছু জার্নালিজম করতে থাকতে হয়। এইটা বাকশালের জন্য যেমন, ফালার জন্যও মুসিবতেরই। কিছুটা অকওয়ার্ড সিচুয়েশন তৈরি হয় এতে কইরা। এইটা নিয়া বাকশাল মাঝে মাঝেই মজা লয়। টিজ করে। এর বেশি কিছু না। ঘটনা হইল বাকশাল আর ফালার এনিমি এক। এবং সেই কমন এনিমির প্রশ্নে এনারা সমস্ত ডমেস্টিক ভায়োলেন্স ভুলে যাইতে রাজি আছে। নিমেষে।

ঘ.
সামনে ইলেকশন রাইখা বাকশাল ফালার প্রশ্নাতীত আনুগত্য কামনা করে। যাতে আসছে ইলেকশনের ডাকাতিগুলি একটা এফিসিয়েন্ট মিডিয়া ব্ল্যাক আউটের ভেতর লুকায়া ফেলা যায়। মানুশের মুখে মুখে যেটুকু ছড়াবে ওইটারে গুজব বইলা কন্টেইন করা যাবে যদি সেখানে মিডিয়ার কোরোবোরেশন না থাকে। সো মনে হইতে পারে, ফালার তো তাইলে একটা রোল আছেই ‘গণতন্ত্র রক্ষায়’। আমি মনে করি, ওইটুকু জার্নালিজমে গণতন্ত্র রক্ষার চেয়ে ফালার ইমেজ রক্ষা পায় বেশি। মানে ফালা তখনই বাকশালের সমালোচনা করবে, যখন সে নিশ্চিত বাকশালই গদিতে থাকছে। এইটা অবশ্যই কেবল ফালার সমস্যা না, বরং আমাদের সকল ‘কাউন্টার-কালচারাল’ বাকশাল সমালোচকদেরই সমস্যা যে, যখনই দূরতম সম্ভাবনা দেখা যায় একটা ফেয়ার ডেমোক্রেটিক প্রসেসের তখনই তাদের সকল সমালোচনা গলায় আটকাইয়া যায়। মানে বাকশালের কাউন্টারপার্টের ব্যাপারে এরা বাকশালের চেয়ে অধিক আনকম্ফোর্টেবল। এখনো। ফলে শুধু ফালা না, এদের যে কারু সাথেই বাকশালের বনিবনাগত সমস্যারে পলিটিকালি পাত্তা না দেওয়াটা গণতন্ত্রকামিদের পলিটিকাল কর্তব্য মনে করি।

ইব্রাকর ঝিল্লী

কবি, ক্রিটিক।

  • April 11, 2023