অবিচুয়ারি: মিলান কুন্ডেরা

স্যাডলি, মিলান কুন্ডেরার ফ্যান আমি কখনো হইতে পারি নাই। মানে, উনার ফ্যান হইতে পারাটা যেমন কুল একটা ব্যাপার না, না হইতে পারাটাও তেমন দেমাগ দেখানোর কোন ঘটনা না আর কি। মিলান কুন্ডেরা এমন একজন রাইটার যিনি আমাদের সময়ে (১৯৯০-এর আশেপাশের কথা বলতেছি) ‘পাঠ্য’ ছিলেন। মানে, অই সময়ে আপনি বাংলাদেশে একজন রাইটার হইতে চান, তার মানে মিলান কুন্ডেরা আপনারে পড়তে হবে! [তবে খালি পড়া না, প্রশংসাও করা লাগবে, এবং না করলে এর ‘জবাবদিহি’ করাটাও মাস্টই ছিল মোটামুটি।]
মিলান কুন্ডেরা’র ফার্স্ট বই পড়ি আমি “ঠাট্টা” নামে যেইটা ট্রান্সলেট হইছিল বাংলা-ভাষায়। নভেল তো ভালোই। কিন্তু এর যে ইনহেরিয়েন্ট পরস্তাব, তারে নিতে খটকা-ই লাগছিল মেবি। মানে, ক্ষমতায় থাকা লোকজন জোকস বুঝে না – রিয়েলি ঘটনাটা এইরকম? নাকি ক্ষমতায় থাকা লোকজন ছাড়া আর কারো জোকস করার পারমিশন নাই? তো, ছোট একটা ভুল-বুঝাবুঝির ঘটনাই মেবি এইটা।
পরে ইংলিশে পড়ছিলাম উনার ‘দ্য আনবিয়ারেবল লাইটনেস অফ বিইং’ – সেক্স-টেক্স মিলায়া বেশ কাঁপাকাঁপির একটা এক্সপেরিয়েন্সই ছিল সেইটা। মিলান কুন্ডেরা’রে মনে হইতেছিল একজন ম্যাজিশিয়ান, যে অনেক সুন্দর সুন্দর জাদু দেখাইতেছে ভাষার ভিতর দিয়া।
পরে সিনেমাটাও দেখছিলাম। উনি মারা যাওয়ার পরে একটা নিউজে দেখলাম এই জিনিসটারে হাইলাইট কইরা লেখছে যে, এই নভেল নিয়া সিনেমা বানানো হইছিল এবং এতে জুলিয়েত বিনোশ (Juliette Binoche) এক্ট করছিলেন। মানে, ভিজুয়াল-ফর্মে যাইতে পারাটা তো এখন লিখিত-সাহিত্যের জন্য এক ধরণের এচিভমেন্টের ঘটনাই। কিন্তু তাই বইলা জুলিয়েত বিনোশ পর্যন্ত লেখাটা মিলান কুন্ডেরার লেখার লগে এক ধরণের জোকস করাই আসলে। আর এই ধরণের অপমান উনি অনেক পাইছেন আসলে উনার লাইফে। নোবেল প্রাইজ না পাওয়াটা এই রকম একটা ঘটনা। মানে, উনি তো পলিটিকালি ইম্পর্টেন্ট হয়া উঠতে পারেন নাই আসলে, এই মিস-ফরচুন ছিল উনার।
লাস্ট পড়ছিলাম, উনার প্যারিস রিভিউ’র ইন্টারভিউ’টা। এতো কশাস (সাবধান) উনি – দেইখা খারাপই লাগছে। মনে হইছে উনি উনার এক্সপেরিয়েন্সটারে যেন ট্রান্সলেট করতে পারতেছেন না, ফর্মুলেট করতে চাইতেছেন খালি। তো, এইরকম ডেড-এন্ডে তো রাইটার হিসাবে পৌঁছায়া যাইতে হয় আমাদেরকে অনেক সময়। আর এইটা ঠিকাছে।
মানে, মিলান কুন্ডেরার যেই লিটারারি এডভেঞ্চার সেইটার লগে আমি এসোসিয়েট ফিল করি না, একদম শুরু থিকাই মনেহয়। কিন্তু রাইটার হিসাবে উনি ওভার-হাইপড থিকা এখন কম-রিলেটেড ও কাল্ট হয়া উঠতে থাকলেও উনার রাইটিংসরে এখনো খেয়াল করার দরকার আছে বইলা আমি মনে করি। মিলান কুন্ডেরাদের সময়ের যে আইডিওলজিকাল দুনিয়া সেইটা থিকা আমাদের এখনকার লিটারেচারের দুনিয়া শিফট কইরা অন্য একটা জায়গায় চলে আসছে আসলে, সেইখানে কুন্ডেরা আবার কিভাবে রিলিভেন্ট হয়া উঠতে পারেন – আমি শিওর না; তবে উনার আরো দুই-একটা বই পড়ার ইচ্ছা আছে আমার। এবং আমি শিওর আরো দুই-একটা জিনিস হয়তো শিখতে পারবো আমি উনার কাছ থিকা।
এন্টারটেইনমেন্ট বা এনলাইটমেন্টের বাইরে উনার লেখার কম্পিনিয়ন আমি আরেকটু নিতে চাই। মেবি আমার কিশোর-বয়সের লোনলিনেসের বিউটি’টারেও কিছুটা খুঁইজা পাইতে চাই। আমি হয়তো কিছুটা ডিস-এপয়েন্টেডই হবো, কিন্তু রাইটার হিসাবে উনি যে এখনো মারা যান নাই – এইটা ফিল করতে পারলে ভালো-লাগবে আমার।
একজন রাইটারের ডেথ তার বাঁইচা থাকার ঘটনাটারে ডিস-এসোসিয়েট করার ভিতর দিয়া তার লেখারে নতুনভাবে তৈরি করে। মানে, রাইটার মারা যাওয়ার পরে তার লেখারে আরেকটা সময়ে আরেকভাবে পড়ার স্কোপ তৈরি হয়। এইরকম নানান সময়ের ভিতর দিয়া যাইতে যাইতে একটা সময়ে রাইটিংসেরও মরণ ঘটে। কিন্তু সেইটা আবার রি-ডিসকাভারডও হইতে পারে। এইভাবেই আসলে যে কোন চিন্তা বা আর্ট রিলিভেন্ট থাকতে থাকে।
আই হোপ মিলান কুন্ডেরা এন্ড হিজ রাইটিংস উইল হ্যাভ অ্যা গুড ডেথ।
Leave a Reply