
আমি এফবিতে যে কথাগুলা কই, সেগুলিরে ঠিক কোন ইডিওলজিকাল ছকে ফেলা যায় না বইলা অনেকে কনফিউজড হইয়া থাকে। তো মানুশরে কনফিউজড রাখার ভেতরে অনেকেই অনেক আনন্দ পাইয়া থাকতে পারে, গর্বও বোধ করতে পারে। বাট আমি পাইনা। তাছাড়া আমি মনে করি আমরা এমন এক পলিটিকাল ইডিওলজিকাল প্লেইনে অটোমেটিকালি থাকতে থাকি, যেইখানে যে কোন অবস্থানেরই একটা ইডিওলজিকাল কোঅর্ডিনেটস থাকেই। জাস্ট লোকেট করতে পারার কষ্টটা করতে হয়। সেই জায়গা থেকেই নিজের জায়গাটারে, জাফরুল্লাহ চৌধুরী যেইটারে বলেন, ডিমিস্টিফাই করতে চাইলাম।
আমি মনে করি ইসলামিস্টরা গ্রাউন্ড পাইয়া যায় এমন কোন আলাপ করা বা না করার কিছু নাই এখন। বাংলাদেশে ইসলামিস্টদের গ্রাউন্ড পাওয়ার কিছু নাই, এইখানে অলরেডি ইসলামিস্টদের গ্রাউন্ড তৈরি হইয়া আছেই। এইটারে রিকগনাইজ কইরাই পরবর্তী কর্মকৌশল সেট করতে হবে। অর্থাৎ কোশ্চেনটা পলিটিকাল।
ইসলামিস্টদের গ্রাউন্ড তৈরি হইয়া আছে মানে, ইসলাম এই দেশের মানুশের দৈনন্দিন জীবনের একটা ইন্টেগ্রাল পার্ট। তবে শুধু এই টুকুতে ইসলামিস্টরা সমাজ দখল করতে পারত না। কারণ এই খানকার মুসলমানরা ডিফরেন্ট বিল্ড এর এবং সেইটা ওভারঅল বাংলাদেশের জন্য ভালোই। বাংলাদেশের চারিপাশে যে উবিকুইটাস ইন্ডিয়ান ইনফ্লুয়েন্স এইটারে ট্যাকেল দেয়ার জন্য মানুশের মুসলিমভাব একটা রেজিস্টেন্স হিসাবে কাজ করে। এছাড়া সেই ইসলামিক সেন্টিমেন্ট মাইয়াদের স্বাধীনতার ব্যাপারে বা ডেমোক্রেসির ব্যাপারে অত গোড়া পজিশন রাখেনা। এইখানে দুইটা ঘটনা ঘটছে, যে দুইটা ফ্যাক্টরের কারণে ইসলাম একটা ডিস্টার্বিং বিশয় হিশাবে প্রতিভাত হইতেছে। এক নম্বর হইল এইখানে প্রগ্রেসিভ, সেকুলার, লেফটিস্টরা ক্রমাগত পিপলের আইডেন্টিটির ইন্টেগ্রাল পার্ট ইসলামরে আদারাইজ করছে। দুই নম্বর হইল, এই আমলে এই দেশের বৃহত্তর সমাজরে কার্যত মাদ্রাসা ব্যবস্থার দিকে ঠেইলা দেয়া হইছে। গ্রামের দিকে পিপল রেডিকেল হইয়া গেছে তা না বরং এমন এক আচার ব্যবস্থার দিকে ঢুকে গেছে যেইখানে ইসলাম প্রশ্নের বাইরে কোন আলাপই নাই আর। এইটা এই রেজিম করছে ক্ষমতার জায়গাটা ফ্রি রাখার জন্য যে, ওকে, গ্রাম বাংলা তোমাদের হাতে দিয়া দিলাম, কিন্তু আমাদের দেশ চালানোর জায়গায় হাত দিবা না বা আমাদের এমপিদের ঘাটাবা না। ঘাটাইলে পাখির মত গুলি করা হবে (হেফাজতদের যেমন করা হইছে)। ইসলামিস্ট ইডিওলজি সোসাইটির ফেব্রিকে এইভাবে এম্বসড হইতেছে। গ্রামের দিকে এখন মেয়েরা বোরকা ছাড়া বেরই হয় না। এমনকি মফস্বল শহরের অনেক স্কুলেও মাইয়ারা এখন এপ্রনের মত ফুল লেংথের একটা ড্রেস পরে, রেগুলার ইউনিফর্মের উপরে। তো এই অবস্থায় আসার পেছনে সাত আট বছর আগে ঢাকার উদয়ন স্কুলে মেয়েদের ফুল হাতার ড্রেস কেচি দিয়া কাইটা হাফ হাতার বানানোর কন্ট্রিবিউশান যেমন আছে, তেমন গ্রাম বাংলায় প্রচুর মাদ্রাসা স্থাপনের কন্ট্রিবিউশানও আছে। নরমাল মাদ্রাসা না, এলিট মাদ্রাসা।
তো সোসাইটিরে এমনে ছাইড়া দিয়া রেজিমের লাভ কি হইছে? প্রগতিদের সামনে একটা ইসলামিস্ট ডিস্টোপিয়া হাজির করা গেছে, এবং পিপলের ডেমোক্রেটিক এজেন্সিরে নাই করা গেছে। পিপলের ডেমোক্রেটিক এজেন্সি মানে বিএনপির পলিটিক্সরে নিউট্রালাইজ করা গেছে। বিএনপির যে লিবারেল পলিটিক্সের ধারা সেইটারে নাই করলে ক্ষতি আসলে পিপলের। বিএনপি যেহেতু ডেমোক্রেটিক ধারার দল, এর পলিটিক্সে সকল পক্ষের সমঝোতা একটা কোর জায়গা। সকল পক্ষের ভেতরে ইসলামিস্টরা যেহেতু একটা পক্ষ, ইসলামিস্ট ডিস্টোপিয়া হাজির কইরা বিএনপিরে মূলত দূরে সরাইছে। কিন্তু এই ডিস্টোপিয়ার বিস্তার আওয়ামী লীগের একক কৃতিত্ব। এই জায়গাটা বাংলাদেশের ফেমিনিস্ট, লেফটিস্টরা বুঝতে ব্যর্থ। ব্যর্থ বলার চেয়ে বুঝতে যে ইচ্ছুক না সেইটা বলাই ভালো। মানে এখনো দেখবেন লেফটিস্টরা যারা এই রেজিমের ব্যাপারে সিন্সিয়ারলি ক্রিটিকাল তারা-ও বাংলাদেশের পলিটিক্স এ বিএনপির কোন এজেন্সিশীপ মানে না, মানে এট বেস্ট বিএনপি যে ‘বোকা’র মত ডিসিশন নেয় আর আওয়ামী লীগ যে কত ‘ধুরন্ধর’ এইটাই বলতে থাকে। এবং এট ওয়র্স্ট, আওয়ামী লীগ আর বিএনপিরে ইকুয়েটই করে। এই ইকুয়েট করা আখেরে এই বাকশালি রেজিমরে হেল্পই করে। মানে ক্ষমতাসীন পক্ষরেই একটা লেভারেজ দেয়।
এখন কথা মোটেই এইটা না যে, ক্ষমতাসীন বিএনপি, ক্ষমতাহীন বিএনপির মতই একটা মজলুম দল। বরং এইখানে পলিটিক্সের কোশ্চেনটা যে মিসিং সেইটা হইল মেইন কনসার্নের জায়গা। মানে একটা স্ট্যাটাস কোরে এইটা জিয়ায়েই রাখে। অথচ এইখানে রাজনৈতিক তৎপরতার জায়গা ছিলো, যদি তারা এই রেজিমরে সবচে বড় প্রবলেম হিসাবে আইডেন্টিফাই করতে রাজি হইতো এবং পিপলের পাওয়াররে যদি ট্রুলি রিকগনাইজ করতো। তাইলে তারা বুঝতো এই দেশে ডেমোক্রেসি ফিরা আসা মানে বিএনপিও আবার পাওয়ারে ফিরতে পারে। এবং সেইখানে যদি ইন্টারভিন করতে হয়, তাইলে এই লেফটিস্ট, ফেমিনিস্ট বর্গগুলিরে বিএনপির সাথে বসতে হবে এবং পিপলের কোর সেন্টিমেন্টের জায়গা হিসাবে ইসলামরেও আরও ডেলিকেটলি হ্যান্ডেল করতো। মানে বিএনপি যেহেতু সো কলড ‘আদর্শের’ পলিটিক্স করে না বরং পাওয়ার রিলেটেড রাজনীতি করে, সুতরাং পাওয়ারে গেলে বিএনপিও আরেকটা বাকশালই হইয়া উঠতে পারে, প্রিসাইসলি এই কারণেই বিএনপির পলিটিক্সরে যথাযথভাবে ইনফ্লুয়েন্স করতে পারার জায়গায় যাইতে হইত তাদের। যেমনটা ধরেন জোনায়েদ সাকি করতেছে। এইটা বিএনপিতে বিলীন হওয়ার ব্যাপার না। বরং বিএনপির পলিটিক্স যে পিপলের উপর বেইজ কইরা থাকে, এবং সেই থাকার কারণে এরা পাওয়ারে আবার আসতে পারে এই ডেমোক্রেটিক জায়গাটা বোঝার ব্যাপার। আসলে তো বিএনপির সাথে মোর্চায় যারা যায় তারা বিএনপিতে বিলীন হয় না। এই যে জামায়াত নিয়া এক সময় বলা হইত যে জামায়াত বিএনপিরে খায়া দিছে, এর মানে তো আসলেই এইটা না যে জামায়াত বিএনপিরে খাইয়া দিছে। এর আন্ডারলাইইং মিনিং হইতেছে মোর্চায় যাওয়া দলগুলিরে বিএনপি তাদের জায়গা থেকেই অপারেট করার সুযোগ দেয়। ওই যে বিএনপির পলিটিকাল জায়গাটারে কোন এজেন্সিশিপ দিবে না, মানে বলবে জামায়াত খায়া দিছে বা বিএনপি ‘ভুল’ করতেছে, কিন্তু এইটা যে বিএনপি এজ এ পার্টি ডেমোক্রেটিক জায়গা হইতে ইন্টারভিন করতে চায় না, সেইটা বলবে না; এবং বিএনপি আলীগ একই জিনিস এইভাবে দেখার কারণেও এইটা মিস করে ‘গুড’ প্রগ্রেসিভরা; আওয়ামী লীগ তো তাদের লগে যারা মোর্চায় যায় তাদের এফেক্টিভলি আরেকটা আওয়ামী লীগই বানায় দেয়।
যাহোক যেটা বলতেছিলাম, সাকি বিএনপির সাথে একলগে রাজনীতি করতে চাওয়ার অন্তত তিনটা সম্ভাব্য সুফল দেখতে পাই। এক কার্যকর রেজিমবিরোধী পলিটিক্স স্টার্ট করার সুযোগ তৈরি হয়। কারণ এতে ট্রেডিশনালি আওয়ামি বিরোধী ইসলামিস্ট, পিপলস বেজ নিয়া পলিটিক্স করা বিএনপি, এবং গণতান্ত্রিক আওয়ামীবিরোধী প্রগ্রেসিভ-লেফটিস্টরা একটা যৌথ পলিটিক্স ইনিশিয়েট করতে পারে। দুই, বিএনপি পাওয়ারে গেলে যে ট্রেডিশনাল বাংলাদেশী পাওয়ার পলিটিক্স তারাও করতে পারে এবং পপুলিস্ট ইসলামিস্ট তোষনের দিকে হেইলা পড়তে পারে সেইখানে বিএনপিরে আগে থাকতেই কিছু কন্ডিশন সেট কইরা দেয়ার সুযোগ পাওয়া মানে, বিএনপির সাথে নেগোসিয়েশনে আসার সুযোগ পাওয়া যে ওকে, তোমার সাথে আমি আছি কিন্তু পাওয়ারে গেলে তোমারে এই এই শাশনতান্ত্রিক বদল আনতে হবে বা, তুমি এই এই জিনিস করতে পারবা না। অর্থাৎ একটা চেক এন্ড ব্যালান্স এস্টাব্লিশ করা যেন আর কোন অকল্যাণকর শক্তি আনলিশ করতে না পারে। তিন, বিএনপির যে হিউজ পিপলস বেইজ আছে সেইখানে সাকিরা নিজেদের এজেন্ডার প্রসার করতে পারবে চাইলে। মানে লেফটদের যে ওইভাবে পপুলারিটি নাই এইটা নিয়া যেন লেফটরা হালকা শ্লাঘাও ফিল করে। কিন্তু আমি যদি আমার এজেন্ডারে পাবলিকের ভেতর ছড়াইতে চাই আমার তো কাজ করতে হবে। এখন অলরেডি স্ট্যাব্লিশড একটা পিপলস বেইজরে এইটা করা সহজ, এতে কইরা ব্যাপক যে জনসংযোগ করার দরকার হয়, তা আর দরকার হয় না। কান অলরেডি কিছু তৈয়ার থাকে। এবং বিএনপি এইটা করতে দেয়। ফলে দেখবেন জামাতের সাথে মোর্চার পর বিএনপিতে ইসলামভাবাপন্ন লোকজন বাড়ছে।
এখন এইটা আমি সাকি ধইরা বললাম। কিন্তু এইটারেই বলতে পারেন রাজনৈতিক কৌশলের জায়গাটা। যেই জায়গা থেকে আমি আমার আলাপগুলারে দেখি। মানে ওইটা সাকির মত তা না। জায়গাটা হইল নট অনলি একটা ডেমোক্রসিরে ফিরায়ে আনা বাট, ওইটারে প্রিজার্ভ করা। এবং ইসলামবিরোধী কোন প্যারানয়া বা প্রিজুডিসের ভেতর ঢুইকা না পড়া কিংবা প্রগতিশীল বইলাই কিছু আইডিয়ারে আপহোল্ড না করা যখন আমি বুঝতেছি এইটা এই রেজিমরে হেল্পই করবে, যেই রেজিম কিনা ঘুরপথে ঠিকই বাংলার সোসাইটিরে ব্যাপকভাবে ইসলামাইজড এবং নারীবিরোধী কইরা রাখছে এবং সেইটারে আবার বাংলাদেশের প্রগ্রেসিভ বেইজের কাছেই একটা ডিস্টোপিয়া হিসাবে প্রচার করতেছে। এতে গড়ে পিপলের ফ্রিডম তো কমছেই, দরকারি সময়ে ইসলামিস্টদের গায়ে সহজে গুলি চালাবার লাইসেন্সও দিয়ে রাখছে।
Leave a Reply