টম ক্রুজ/শাহরুখ খান

Share

টপ গান মেভারিকে টম ক্রুজের একটা ডায়ালগ ছিল এমন-

-ডোন্ট গিভ মি দ্যাট লুক।
– বাট আই হ্যাভ গট অনলি ওয়ান।

টম ক্রুজ কিন্তু ভাল কাজ ট্রাই করছে। স্করসাজের কাজ করছে,কুবরিকের কাজ করছে, পল থমাস এন্ডারসনের কাজ করছে। কিন্তু থিতু হইছে শেষ পর্যন্ত একশন স্টার হিসেবে। এই রকম স্টার সিলভেস্টার স্ট্যালন, শোয়ার্জেনিগার, হ্যারিসন ফোর্ডরা, জেট লি, জ্যাকি চ্যানরাও ছিল।

স্টার হওয়াটা ঠিক অভিনয়ের ব্যাপার না। বরং অভিনয় কম পারে, এমন অভিনেতারাই এই ধরনের স্টার হয়।

টম ক্রুজ যখন দেখছে, শুধু অভিনয় দিয়ে তার কাজ হবে না, তখন সে তার সিগনেচার স্টাইল তৈরি করছে। জনরা তৈরি করছে। পপুলারিটি এক্সপান্ড করছে। ফলে কি কাজ করতেছে, সেইটা আর ঠিক অত বাঁধা হইতে পারতেছে না। ব্যাপারটা আর্টের চাইতে এন্টারটেইনার হওয়ার ব্যাপার।

এই কাজটা ব্যবসা বাণিজ্যেও এক রকম। ব্র‍্যান্ডিং করা। যখন ব্র‍্যান্ডিং হয়ে যায়,তখন প্রাইস অনুযায়ী কোয়ালিটি কি পাইলেন, সেইটা দূর্বল হয়ে যায়। আপনার হাতে আইফোন আছে, এই ব্র‍্যান্ডিং-ই আপনি কেনেন আসলে।

বলিউডের তিন খান গত ত্রিশ বছর যাবত এই কাজই করছে। এইভাবেই বলিউড দাঁড়ায়া ছিল।

ফিনান্সিয়ালি রান করছে। এবং এইটা সবচেয়ে সাকসেসফুলি করছে শাহরুখ খান। পাঠান সিনেমা না দেখেই বলতে পারি, এইটা বিলো এভারেজ সিনেমা।

শাহরুখ খান যে ভাল সিনেমা করে নাই, তা না। কিন্তু তার জোরের জায়গা যে ভাল কাজ না, বরং ভাল কাজকে ব্যবহার করে খারাপ কাজ উতরায়া নিয়ে যাওয়া, এইটা সে বহু আগেই বুঝতে পারছে।

শাহরুখ খান যে অভিনেতার বদলে একজন আইকন এন্টারটেইনার এই ব্যাপারে সচেতন, তা বোঝা যায়। তিনি আর্টিস্টিক সেন্সে যেইগুলা ‘ভাল’ কাজ সেইগুলাও করবে না, তাও ধরে নেয়া যায়। স্টারডমের যে লিগাসি গড়ে তুলছেন, তা ইনট্যাক্ট রেখেই মারা যাবেন। রজনীকান্তরাও একই কাজ করছেন।

শাহরুখ খান বলছেন যে, তিনি লাস্ট অফ দা স্টারস। তিনি সম্ভবত এই সেন্সে বলছেন যে, স্টারডমের যে হাইটে তিনি পৌঁছাইছেন যে, তা আর আসবে না মানে এই কালচারটা এখন আর ওয়ার্ক করে না।

ভারতে এখন আল্লু অর্জুন, ফাহাদ ফাসিল, নানি, ইয়াশ, রামচরণরা রাইজিং স্টার। কিন্তু তারপরও ভাল কাজ করতে না পারলে, এই স্টারডম সারভাইভ করবে না।

শাহরুখ খান নিজেকে যে মিথে পরিণত করছেন, তা এক বিস্ময়কর ব্যাপারই।

শাহরুখ খানের বহু সাক্ষাৎকারে তিনি বলছেন যে, তিনি খুব বড় অভিনেতা না। আমার কাছে মনে হইছে, তিনি বুঝে শুনে সিরিয়াসলিই বলছেন। তিনি খুব বড় অভিনেতা হইতেও বোধহয় চান নাই। একটা বিরাট অংশের মানুষ যা দেখতে পছন্দ করে, তিনি তাই হইতে চাইছেন সম্ভবত।

এবং এইটা সহজ কাজ মনে করার কোন কারণ নাই।

টম হ্যাঙ্কস চাইলেই টম ক্রুজ হইতে পারবে না।

নওয়াজুদ্দিন সিদ্দিকী চাইলেই শাহরুখ খান হইতে পারবে না।

কবির আহমেদ

জীবিকার জন্য একটা চাকরি করি। তবে পড়তে ও লেখতে ভালবাসি। স্পেশালি পাঠক আমি। যা লেখার ফেসবুকেই লেখি। গদ্যই প্রিয়। কিন্তু কোন এক ফাঁকে গত বছর একটা কবিতার বই বের হইছে।

  • February 16, 2023